কমিটি নিয়ে আ.লীগের দুই পক্ষের বিক্ষোভ, ককটেলসহ ১৮ তরুণ আটক
নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির অনুমোদনের পক্ষে ও বিপক্ষে দলটির দুইপক্ষের বিক্ষোভকালে আটক তরুণদের কাছ থেকে উদ্ধার করা ককটেল। বুধবার বিকেলে কবিরহাট উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নের ওটারহাটে
নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির অনুমোদনের পক্ষে ও বিপক্ষে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। জেলার কবিরহাট উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নের ওটারহাট ও জামতলা এলাকায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও নোয়াখালী-৪ আসনের সাংসদ মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর অনুসারীরা পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করেন।
বিক্ষোভ চলাকালীন ওটারহাট বাজারে একটি মাইক্রোবাসে তল্লাশি চালিয়ে ৬টি ককটেল, ৩টি লোহার পাতসহ ১৮ তরুণকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন ওবায়দুল কাদেরের অনুসারীরা। আটক তরুণেরা সাংসদ একরামুল করিমের পক্ষের বলে কাদেরের অনুসারীরা অভিযোগ করেছেন।
পুলিশ ও দলীয় সূত্র জানায়, জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির অনুমোদনের দাবিতে বুধবার বিকেল চারটায় ওটারহাট বাজারে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা করেন নোয়াখালী-৪ আসনের সাংসদ একরামুল করিমের অনুসারী আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। এ খবরে স্থানীয়ভাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি জসিম উদ্দিনসহ স্থানীয় আরেকটি পক্ষ একই স্থানে একই সময় পাল্টা বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা করে। তাঁরা জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত ওই কমিটির অনুমোদন না দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করার দাবিতে এ কর্মসূচির আয়োজন করেন।
দলীয় সূত্র আরও জানায়, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে ঘিরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক পক্ষকে ওটারহাট, আর আরেক পক্ষকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে জামতলা এলাকায় বিক্ষোভের অনুমতি দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উভয়পক্ষ নিজ নিজ স্থানে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বিকেল পাঁচটার দিকে সাংসদ একরামুলের অনুসারীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে ছাত্রলীগের দুই কর্মী মো. বিজয় (২২) ও মো. রাকিবকে (১৯) মারধর করেন ওবায়দুল কাদেরের অনুসারীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, এ ঘটনার পর সাংসদের অনুসারীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ওটারহাট দিয়ে যাওয়ার পথে একটি মাইক্রোবাস আটক করেন ওবায়দুল কাদেরের অনুসারীরা। পরে থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মাইক্রোবাসে তল্লাশি চালিয়ে ৬টি ককটেল, ৩টি লোহার পাতসহ ১৮ তরুণকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ নিয়ে সাংসদ একরামুলের অনুসারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটি অনুমোদনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেছিল। সেখানে ওবায়দুল কাদেরের অনুসারীর দাবি, কয়েক ব্যক্তি পাল্টা কর্মসূচি দেন। পরে তাঁরা কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করেন। তাঁদের কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে মারধর করা হয় এবং একটি মাইক্রোবাস থামিয়ে ভেতরে ককটেল ও লোহার পাত ঢুকিয়ে দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া হয়।
তবে এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদেরের অনুসারী জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকে নিষেধ করায় তাঁরা তাঁদের কর্মীদের ওটারহাট উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠের ভেতর নিয়ে যান। এ সময় খবর পান তাঁদের মিছিলে হামলার জন্য সাংসদ একরামুলের পক্ষে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা আসছে। ওই খবরের ভিত্তিতে একটি মাইক্রোবাসে তল্লাশি চালিয়ে ১৮ সন্ত্রাসীকে ককটেল, লোহার পাতসহ আটক করে কবিরহাট থানা-পুলিশে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা টমাস বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভের আয়োজন করে। এর মধ্যে একটি পক্ষের বিক্ষোভে যাওয়ার পথে একটি মাইক্রোবাস থেকে ১৮ তরুণকে আটক করা হয়েছে। এ সময় ওই মাইক্রোবাস থেকে ছয়টি ককটেল ও তিনটি লোহার পাত উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
0 Response to "কমিটি নিয়ে আ.লীগের দুই পক্ষের বিক্ষোভ, ককটেলসহ ১৮ তরুণ আটক"
Post a Comment