শেষ মূহুর্তের গোলে রক্ষা বার্সেলোনার
মূল একাদশে সের্হিও বুসকেতস, ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং, সের্হি রবের্তো, মেম্ফিস ডিপাই, ফিলিপ কুতিনিও, সের্হিনিও দেস্ত - সবাই ছিলেন। বিকল্প খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন জেরার্দ পিকে, লুক ডি ইয়ংয়ের মতো অভিজ্ঞরাও। শেষ পর্যন্ত দুই তরুণের হাত ধরেই অপ্রত্যাশিত পরাজয় এড়িয়েছে বার্সেলোনা।
১৭ বছর বয়সী স্প্যানিশ মিডফিল্ডার গাভির সহায়তায় ২২ বছর বয়সী উরুগুইয়ান সেন্টারব্যাক রোনালদ আরাউহোর গোলে গ্রানাদার বিপক্ষে নিজেদের মাঠে কোনো রকমে ড্র করেছে বার্সেলোনা। বার্সেলোনার মতো দলের বিপক্ষে পুরো তিন পয়েন্ট না পাওয়ার আক্ষেপ গ্রানাদাকে পোড়াবে নিশ্চয়ই!
শুরুতেই এগিয়ে গিয়েছিল গ্রানাদা। ক্যাম্প ন্যু'র দর্শকেরা ঠিকঠাক বেঞ্চে বসতে পেরেছেন কি পারেননি, এর মধ্যেই দুই মিনিটে অতিথিদের এগিয়ে দেন পর্তুগিজ ডিফেন্ডার দমিঙ্গোস দুয়ার্তে। সেভিয়ার সাবেক লেফটব্যাক সের্হিও এসকুদেরোর ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে সহজেই দলকে এগিয়ে দেন দুয়ার্তে।
ক্যাম্প ন্যু তে গত মৌসুমেই জিতে গিয়েছিল গ্রানাদা। দুয়ার্তের গোলের পর গ্রানাদা-সমর্থকদের মনে নিশ্চিতভাবেই সেই স্মৃতি দোলা দিয়ে গেছে!
১২ মিনিটে গ্রানাদার ফরোয়ার্ড হোর্হে মলিনা একটা সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেননি। ততক্ষণে ক্যাম্প ন্যু চুপচাপ, বুসকেতস-ডি ইয়ং-ডিপাইদের খেলা দেখে কাতালান দর্শকেরা হয়তো বুঝে গিয়েছিলেন, আজ রাতটা লম্বা হতে চলেছে বেশ!
তবে স্তব্ধ কাতালান দর্শকদের মনে উন্মাদনা সঞ্চার করতে বেশি সময় নেননি সের্হি রবের্তো। পেদ্রির অনুপস্থিতিতে আজ মিডফিল্ডেই খেলেছেন সাধারণত রাইটব্যাকে খেলে থাকা বার্সার চার অধিনায়কের একজন। ১৮ মিনিটে প্রায় গোল করেই ফেলেছিলেন তিনি। কিন্তু পোস্টে লেগে সে যাত্রায় সমতা ফেরাতে পারেনি বার্সেলোনা।
বার্সেলোনার খেলার মধ্যে বৈচিত্র্যময় একটা জিনিস দেখা যাচ্ছে আজকাল, সেটা হলো, আজকাল বেশ ক্রস-নির্ভর খেলা শুরু করেছে দলটা। যে ধরণের ফুটবল বার্সেলোনা সাধারণত খেলে থাকে না। এই ম্যাচেও তার ব্যতিক্রম ছিল না। তবে বার্সেলোনার ক্রসনির্ভর ফুটবল ভীতি জাগাতে পারেনি গ্রানাদার রক্ষণে।
বায়ার্নের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে শেষ কিছু সময়ে মাঠে নেমে আলো ছড়িয়েছিলেন তরুণ লেফটব্যাক আলেহান্দ্রো বালদে। যার পুরষ্কারস্বরূপ আজ মূল একাদশে নামান হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু চোটের কারণে ৪১ মিনিটেই মাঠ থেকে উঠে যেতে হয় তাঁকে, তাঁর জায়গায় মাঠে নামান হয় অস্কার মিঙ্গেসাকে।
প্রথমার্ধের শেষদিকে নিজেদের একাডেমি লা মাসিয়ার খেলোয়াড় মনচুর কাছে আরেকটু হলে গোল খেতে বসেছিল বার্সেলোনা। কিন্তু টের স্টেগেনের কল্যাণে সে যাত্রায় রক্ষা পায় কাতালানরা।
তবে বার্সেলোনাও যে একদম সুযোগ পাচ্ছিল না, তা নয়। এর ঠিক পরপরই রোনালদ আরাউহো গোল করার দুটি সুযোগ পান, একটা দুর্দান্তভাবে ঠেকিয়ে দেন গ্রানাদার গোলকিপার লুইস মাক্সিমিলিয়ানো, আরেকটা শট পোস্টের ওপর দিয়ে চলে যায়।
ক্রসনির্ভর ফুটবল খেলতে যাতে সুবিধা হয়, সে জন্যই কি না, দ্বিতীয়ার্ধে সের্হি রবের্তোর জায়গায় মাঠে নামানো হয় ডাচ স্ট্রাইকার লুক ডি ইয়ংকে। ওদিকে মেম্ফিস ডিপাইও বেশ কিছু সুযোগ নষ্ট করেছেন, যার একটি ছিল ফ্রি-কিক থেকে। ৭৯ মিনিটে লুক ডি ইয়ং অসাধারণ এক সুযোগ পেয়েও গোল করতে পারেননি।
শেষমেশ ৯০ মিনিটে আরাউহোর কল্যাণে গোল আসে বার্সেলোনার কাছে। এই নিয়ে চার ম্যাচ খেলে দুটিতেই ড্র করল বার্সেলোনা। দুই জয় ও দুই ড্র নিয়ে মোট আট পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার সাত নম্বরে আছে দলটা। ওদিকে লিগের শীর্ষে আছে গতকাল ভ্যালেন্সিয়াকে তাদের মাটিতেই হারিয়ে আসা রিয়াল মাদ্রিদ। এর মধ্যেই বার্সার চেয়ে ৫ পয়েন্টে এগিয়ে আছে তাঁরা।
0 Response to "শেষ মূহুর্তের গোলে রক্ষা বার্সেলোনার"
Post a Comment