
রোনালদোকে নিয়ে ইউনাইটেডের একাদশ যেমন হতে পারে
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো যোগ দেওয়ায় দলবদল মৌসুমটা স্বপ্নের মতো কাটল ইউনাইটেডের ফাইল ছবি: এএফপি
ইউরোপে এবার দলবদল মৌসুমে সেরা পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি হয়তো পিএসজিই পাবে। ফ্রান্সের ক্লাবটি একে একে জর্জিনিও ভাইনালডাম, জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা আর সের্হিও রামোসের পর লিওনেল মেসিকেও দলে টেনেছে। হ্যাঁ, কিলিয়ান এমবাপ্পে শেষ পর্যন্ত পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে চলে গেলে পিএসজির দলবদলের পারফরম্যান্সে একটু কালো দাগ লাগবে ঠিকই।
কিন্তু ইউরোপে এবার পিএসজির সঙ্গে দলবদলে সেরা পারফরম্যান্সের দৌড়ে যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামার মতো কোনো দল থেকে থাকে, সেটি সম্ভবত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডই। ইউরোপ থেকে পরিধিটা ছোট করে শুধু ইংল্যান্ডের কথা ভাবলে ইংলিশ ক্লাবগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দারুণ খেল যে ম্যান ইউনাইটেডই দেখিয়েছে, এ নিয়ে দ্বিমত করার মানুষ সম্ভবত খুঁজে পাওয়া যাবে না।
জেডন সানচো ও রাফায়েল ভারানকে নেওয়ায় দলবদল মৌসুমে ইউনাইটেডের পারফরম্যান্সকে আগে থেকেই ‘দারুণ’ ভাবা হচ্ছিল। সেটি ‘স্বপ্নের মতো’ হয়ে গেল কাল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও ‘ঘরে’ ফেরায়।
মাঠের পারফরম্যান্স কেমন হবে, দলের সমন্বয় কতটা ভালো করতে পারবেন ইউনাইটেড কোচ উলে গুনার সুলশার, সে এখন দেখার বিষয় ঠিকই। কিন্তু ব্রুনো ফার্নান্দেজ, পল পগবা, মার্কাস রাশফোর্ডরা তো ছিলেনই, এবার রোনালদো-সানচো-ভারানদের নিয়ে কাগজ-কলমে কী অসাধারণ একটা দলই না গড়েছে ইউনাইটেড! কাকে ছেড়ে কাকে দলে রাখবেন সুলশার, সে-ই এখন ভাবনা।
রোনালদোও ইউনাইটেডে ফেরার পর এখন আলোচনার বিষয়, ইউনাইটেডের একাদশ তাহলে কেমন হবে?
সে আলোচনায় যাওয়ার আগে ইউনাইটেড এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত যে একাদশ খেলিয়েছে, সেদিকে চোখ ফেরানো যাক। মৌসুমে এখন পর্যন্ত দুটি ম্যাচ খেলেছে ইউনাইটেড। ইংল্যান্ডের কোয়ারেন্টিন–সংক্রান্ত নিয়ম ও দলবদলের খুঁটিনাটি নিয়ে ঝামেলায় রাফায়েল ভারান তো সেই দুই ম্যাচের দলেই ঢুকতে পারেননি, সানচোও দুই ম্যাচে নেমেছেন বদলি হিসেবে।
লিডস ইউনাইটেড ও সাউদাম্পটনের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচেই গোলপোস্টে দাভিদ দে হেয়াকে রেখে তাঁর সামনে ইউনাইটেড কোচ সুলশার একাদশ সাজিয়েছেন ৪-২-৩-১ ছকে। যদিও কাগজ-কলমের এই ছকটাতে পগবাকে মধ্যমাঠের তিনের একজন ধরে নিয়ে ছকটা অনেকের চোখে আসলে ছিল ৪-৩-৩।
ভারান না থাকায় দুই ম্যাচেই ইউনাইটেডের রক্ষণ একই ছিল—রাইটব্যাকে অ্যারন ওয়ান-বিসাকা, দুই সেন্টারব্যাক ভিক্তর লিন্দেলফ ও হ্যারি ম্যাগুয়ার, লেফটব্যাকে লুক শ। মধ্যমাঠের দুইয়ে লিডসের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে সুলশার খেলিয়েছেন স্কট ম্যাকটমিনে ও ফ্রেদকে, সাউদাম্পটনের বিপক্ষে ফ্রেদের সঙ্গে ছিলেন নেমানিয়া মাতিচ।
কাগজে-কলমের ছকে তিন আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডারের জায়গায় লিডসের বিপক্ষে ছিলেন পল পগবা, ব্রুনো ফার্নান্দেজ ও ড্যানিয়েল জেমস, তাঁদের সামনে স্ট্রাইকার হিসেবে খেলেছেন ম্যাসন গ্রিনউড। সাউদাম্পটনের বিপক্ষে পগবা-ফার্নান্দেজের সঙ্গে ছিলেন গ্রিনউড এবং স্ট্রাইকার হিসেবে খেলেছেন আন্থনি মার্শিয়ালকে। চোটের কারণে ছিলেন না রাশফোর্ড।
তা ৪-২-৩-১ হোক বা ৪-৩-৩, ছক যা-ই হোক, রোনালদো এলে ইউনাইটেডের একাদশে রোনালদো যে সরাসরিই ঢুকে যাবেন, তা নিয়ে সংশয় নেই। প্রশ্ন হলো, তাঁকে জায়গা দিতে বাদ পড়বেন কে? রোনালদোকে মূল স্ট্রাইকার হিসেবে নাকি বাঁ দিকের উইংয়ে, কোথায় খেলাবেন সুলশার?
ইংল্যান্ডের সংবাদমাধ্যমে গুঞ্জন, বয়স ৩৬ পেরিয়ে যাওয়া রোনালদোকে আর উইংয়ে খেলানোর ঝুঁকি নেবেন না সুলশার। আর রোনালদোর মতো গোলশিকারি এই মুহূর্তে ইউনাইটেডে কে আছে? বিশ্বেই বা এমন আর কজন আছেন? সে কারণে রোনালদোকে মূল স্ট্রাইকার হিসেবে খেলাতে পারেন সুলশার, এমন আলোচনাই বেশি।
সে ক্ষেত্রে পগবাকে মধ্যমাঠে ফ্রেদ বা ম্যাকটমিনের সঙ্গে জুটি গড়ার কাজ দিতে পারেন সুলশার। তাঁদের সঙ্গে ব্রুনো ফার্নান্দেজ থাকবেন আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার হিসেবে। ফিটনেস নিয়ে শঙ্কা না থাকলে দুই উইংয়ে সানচো আর রাশফোর্ডই থাকবেন, এমনই শোনা যাচ্ছে। রক্ষণে ভারান ফিরলে হয়তো তাঁকে জায়গা দিতে সরে যেতে হতে পারে লিন্দেলফকে।
রোনালদোকে নিয়ে তাই ইউনাইটেডের একাদশটা হতে পারে এমন—(৪-৩-৩ ছক):
দে হেয়া (গোলকিপার); ওয়ান-বিসাকা, ভারান, ম্যাগুয়ার, শ (রক্ষণ); ফ্রেদ-পগবা-ফার্নান্দেজ (মধ্যমাঠ), সানচো-রাশফোর্ড ও রোনালদো (আক্রমণ)।
0 Response to "রোনালদোকে নিয়ে ইউনাইটেডের একাদশ যেমন হতে পারে"
Post a Comment