-->
গ্যারেজের জায়গায় প্রস্রাব করার জেরে খুন হন খায়রুল

গ্যারেজের জায়গায় প্রস্রাব করার জেরে খুন হন খায়রুল

গ্যারেজের জায়গায় প্রস্রাব করার জেরে খুন হন খায়রুল

বগুড়ায় বেসরকারি একটি রোগনির্ণয় কেন্দ্রের গ্যারেজের খোলা জায়গায় প্রস্রাব করা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে ভাড়ায় চালিত গাড়ির চালক খায়রুল ইসলামকে (২৭) ছুরিকাঘাতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের কেউ বেসরকারি রোগনির্ণয় কেন্দ্রের কর্মী নন।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুজনের মধ্যে বাবু মিয়া (২৭) নামের একজন পাশের একটি আসবাবের দোকানের কর্মচারী। অন্যজন তাঁর সহযোগী। আজ সোমবার বগুড়ার পুলিশ সুপার (এসপি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান। এসপি জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত শনিবার রাতে অভিযুক্ত বাবুকে বগুড়ার কাহালু উপজেলার মুরইল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর রোববার সন্ধ্যায় বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ শাহরিয়ার তারিকের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। গাবতলী উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের বাসিন্দা বাবু মিয়াকে খায়রুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।


পুলিশ সূত্র জানায়, খায়রুল ইসলাম ভাড়ায় চালিত একটি ব্যক্তিগত গাড়ির চালক। গত বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বগুড়া শহরের কানুচগাড়ি এলাকার প্রধান সড়কে দুর্বৃত্তরা রাস্তা থেকে ধাওয়া করে খায়রুল ইসলামকে। প্রাণ বাঁচাতে সড়কের পাশের বিএইচ ফার্মেসি নামের একটি ওষুধের দোকানে আশ্রয় নেন তিনি। দুর্বৃত্তরা দোকানের ভেতরে ঢুকে প্রকাশ্যে তাঁকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন খায়রুলকে উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।


খায়রুল রংপুর শহরের মিস্ত্রিপাড়া এলাকার অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ আবদুল খালেকের ছেলে। তিনি বগুড়া শহরের সাবগ্রাম এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন এবং ব্যক্তিগত গাড়ি ভাড়ায় চালাতেন। ওই ঘটনার পরদিন খায়রুলের বাবা ও রংপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে কর্মরত অফিস সহকারী আবদুল খালেক বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা দুজনকে আসামি করে বগুড়া সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।

আজ নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার রাতে খায়রুল তাঁর এক বন্ধুকে নিয়ে কানুচগাড়ি এলাকার বেসরকারি একটি রোগনির্ণয় কেন্দ্রের সামনে ব্যক্তিগত গাড়িতে বসে অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় তাঁর প্রস্রাবের চাপ লাগলে ওই রোগনির্ণয় কেন্দ্রের গ্যারেজের ভেতরে খোলা জায়গায় প্রস্রাব করেন।

রোগনির্ণয় কেন্দ্রের গ্যারেজের বাইরে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন মো. বাবু ও তাঁর বন্ধুরা। গ্যারেজের খোলা জায়গায় প্রস্রাব করা নিয়ে প্রথমে নিরাপত্তাকর্মী শাকিল বাধা দিলে বাবু আমলে নেননি। এ সময় গ্যারেজের বাইরে বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন বাবুসহ অন্যরা। গ্যারেজের খোলা জায়গায় প্রস্রাব করা নিয়ে প্রথমে খায়রুলের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়ান বাবু ও তাঁর সঙ্গীরা। দীর্ঘক্ষণ বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে গাড়িতেই প্রথম দফা ছুরিকাঘাত করা হয় খায়রুলকে। এ সময় খায়রুল প্রাণ বাঁচাতে পাশের ওষুধের দোকানে ঢুকে পড়লে সেখানে দ্বিতীয় দফা হামলা চালিয়ে খায়রুলকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে বাবু ও তাঁর সঙ্গীরা পালিয়ে যান। রোববার রাতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও বনানী ফাঁড়ি পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে কাহালু উপজেলা থেকে বাবুকে গ্রেপ্তার করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বগুড়া শহরের বনানী ফাঁড়ির পরিদর্শক মাহমুদ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত বাবুর আরেক সঙ্গী এখনো পলাতক। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

বাবুকে গত শনিবার রাতে গ্রেপ্তার করা হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি গোপন রাখা হয়। এ ছাড়া রোববার আদালতে স্বীকারোক্তি প্রদান করলেও এক দিন পর পুলিশের পক্ষ থেকে প্রেস ব্রিফিং করে তা জানানো হয়।

তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, আসামি গ্রেপ্তারের বিষয়টি প্রেস ব্রিফিং করে গণমাধ্যমকে জানানোর কথা ছিল। কিন্তু এসপি স্যারের ব্যস্ততার কারণে রোববার তা হয়নি।

0 Response to "গ্যারেজের জায়গায় প্রস্রাব করার জেরে খুন হন খায়রুল"

Ads on article

Advertise in articles 1

advertising articles 2

Advertise under the article