-->
জামাইকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগে শাশুড়ি আটক

জামাইকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগে শাশুড়ি আটক

নাসিরুলকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেন মেয়ের স্বজনেরা
নাসিরুলকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেন মেয়ের স্বজনেরা


ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার ভাংবাড়ি মধ্যপাড়া গ্রামের নাসিরুল ইসলামের (২২) সঙ্গে একই গ্রামের এক কিশোরীর (১৫) ফেসবুকে পরিচয় হয়। সেই পরিচয় থেকে প্রথমে প্রেম, তারপর পালিয়ে বিয়ে। কিন্তু এ বিয়ে কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি মেয়েপক্ষ।

বিয়ে মেনে নেওয়ার আশ্বাসে কৌশলে মেয়েকে বাড়িতে ফেরত আনে মেয়ের পরিবার। এরপর ২০ সেপ্টেম্বর নাসিরুল শ্বশুরবাড়ি গেলে তাঁকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেন মেয়ের স্বজনেরা। ওই দিন বিকেলে ওই তরুণকে নির্যাতন করা হলেও নির্যাতনের একটি ভিডিও গতকাল বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে নির্যাতনে জড়িত থাকার অভিযোগে আজ শুক্রবার বেলা একটার দিকে মেয়ের মা শিরিনা আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ।


এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ৯ সেপ্টেম্বর নাসিরুল ও ওই কিশোরী পালিয়ে ঠাকুরগাঁও গিয়ে বিয়ে করেন। এরপর তাঁরা দুজন নারায়ণগঞ্জে চলে যান। এদিকে মেয়ের পরিবারের লোকজন মেয়ের খোঁজখবর নিতে শুরু করেন। একপর্যায়ে নারায়ণগঞ্জ গিয়ে বিয়ে মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মেয়েকে বাড়িতে ফেরত আনেন তাঁরা।

এরপর ২০ সেপ্টেম্বর নাসিরুল তাঁর এক বন্ধুকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি গেলে মেয়ের মা শিরিনা আক্তার, বাবা করিমুল হকসহ কয়েকজন নাসিরুলকে লাঠিসোঁটা দিয়ে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁকে পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয়। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ব্যক্তিদের কেউ একজন মুঠোফোনে ঘটনাটি ভিডিও করে। পরে সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, নাসিরুলকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। আর তাঁকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাচ্ছেন এক নারী। পরে ওই নারীকে শিরিনা আক্তার বলে শনাক্ত করেন এলাকাবাসী। ভিডিওতে নাসিরুলকে চিৎকার করে আকুতি-মিনতি করতে শোনা যায়।
মোহাম্মদ রাসেল নামের স্থানীয় এক যুবক বলেন, নাসিরুলকে এক থেকে দেড় ঘণ্টা ধরে লাঠিপেটা করা হয়। এ সময় তাঁর পেট, বুক, গোপনাঙ্গে লাত্থি দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হয়।


আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নাসিরুল
আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নাসিরুল 
ছবি: সংগৃহীত


খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নাসিরুলকে উদ্ধার করে রানীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নাসিরুল এখনো সেখানে চিকিৎসাধীন।

নাসিরুলের মা নাসিমা খাতুন বলেন, ছেলেকে কীভাবে মারছে, তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। তার প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে এখনো রক্ত যাচ্ছে।

এদিকে শিরিনা আক্তারকে আটকের সময় তিনি বলেন, তাঁর মেয়ে অনেক ছোট। নাসিরুল তাকে ফুসলিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। এ কারণে নাসিরুলকে মারধর করা হয়েছে।

জানতে চাইলে রানীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম জাহিদ ইকবাল বলেন, গত সোমবার বিকেলে ঘটনার খবর পেয়ে নাসিরুলকে সেখান থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ফেসবুকে নির্যাতনের ভিডিও দেখে আজ ওই নারীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।


0 Response to "জামাইকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগে শাশুড়ি আটক"

Ads on article

Advertise in articles 1

advertising articles 2

Advertise under the article