-->
তালেবানদের ভয়ে আফগানিস্তান ছাড়তে চাইছে ‘প্লাস্টিক মেসি’

তালেবানদের ভয়ে আফগানিস্তান ছাড়তে চাইছে ‘প্লাস্টিক মেসি’


এই ছবি দিয়ে বিখ্যাত হয়ে গিয়েছিল মুর্তাজা ছবি: টুইটার

পাঁচ বছর আগে সাড়া ফেলে দিয়েছিল মুর্তাজা আহমাদি। ২০১৬ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল এক ভিডিও। মেসির জার্সি পরে ছুটে বেড়াচ্ছে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশু। সে জার্সি আবার কাপড়ের নয়। অর্থের অভাবে প্লাস্টিকের ব্যাগ কেটে মেসির জার্সি বানিয়ে দিয়েছিল তার বড় ভাই। মেসির প্রতি ভালোবাসায় তাতে কোনো টান পড়েনি। সেভাবেই গর্বের সঙ্গে মেসির জার্সি পরে ছুটে বেড়াত এই শিশু।

খোঁজাখুঁজি পড়ে গেল, পরিচয়ও বেরিয়ে গেল। আফগানিস্তানের সে শিশু বিখ্যাত হয়ে গিয়েছিল রাতারাতি। সেই আহমাদি এখন জীবনের শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে। তালেবান শাসন আমলে প্রাণের ভয়ে দেশ ছাড়তে চাইছে সে ও তার পরিবার।


বার্সেলোনা দলের সঙ্গে মুর্তাজা আহমাদি
বার্সেলোনা দলের সঙ্গে মুর্তাজা আহমাদি
ফাইল ছবি : এএফপি


২০১৬ সালে সে ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর লিওনেল মেসি নিজেও আপ্লুত হয়েছিলেন। আহমাদিকে ডেকে নিতে চেয়েছিলেন বার্সেলোনায়। ভিসা-জটিলতার কারণে সেটা সম্ভব না হওয়ায় পরে ইউনিসেফ আফগানিস্তানের মাধ্যমে মেসি দুটি জার্সি ও কিছু ফুটবল উপহার পাঠান।

পরে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে দোহায় একটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে গিয়েছিল বার্সেলোনা। সেখানেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে আহমাদির। আল আহলির মাঠে নামার সময় আহমাদির হাত ধরেই নেমেছিলেন। সব বলবয় বেরিয়ে যাওয়ার পরও মেসিকে জড়িয়ে ধরে থাকা আহমাদির সে ছবি আবার আবেগময় করে তুলেছিল সবাইকে।


এই ছবির শিশুটি এখন মৃত্যু ভয়ে দিন কাটাচ্ছে
এই ছবির শিশুটি এখন মৃত্যু ভয়ে দিন কাটাচ্ছে 
ফাইল ছবি: রয়টার্স

১০ বছর বয়সী আহমাদি এখন কাবুলে আছে। নিজ গ্রামে তালেবানদের আক্রমণের ভয়ে পালিয়ে কাবুলে এসেছে, কিন্তু এখানেও যে স্বস্তিতে নেই তারা। সংবাদ সংস্থা ইএফইকে আহমাদি বলেছে, ‘আমি ঘরে আটকা পড়ে আছি এবং তালেবানদের ভয়ে বাইরে বের হতে পারছি না।’

জীবন বাঁচানোর জন্য সংবাদ সংস্থার কাছে আকুতি শুনিয়েছে আহমাদি, ‘আফগানিস্তান থেকে অন্য কোনো নিরাপদ স্থানে যেতে চাই। দয়া করে আমাকে এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচান।’


মুর্তাজার অনেক ভালোবাসার জার্সি
মুর্তাজার অনেক ভালোবাসার জার্সি
ফাইল ছবি: রয়টার্স

আহমাদিদের জীবন নিয়ে এমন সংশয়ে পড়ে যাওয়ার কারণটি ধর্মীয়। ইসলাম ধর্মের অনুসারী হলেও আহমাদিদের পরিবার হাজারা শিয়া সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। এই সম্প্রদায়ের লোকদের খুঁজে বেড়াচ্ছে তালেবান গোষ্ঠী। দুই মাস আগে এই ভয়েই গ্রাম ছেড়ে কাবুল এসেছিল পরিবারটি। তখন নিরাপত্তাও দেওয়া হয়েছিল তাঁদের। কিন্তু এখন আর সেটি পাচ্ছেন না তাঁরা।

মুর্তাজার বোন ২২ বছর বয়সী মাহদিয়া আহমাদির কণ্ঠেও শঙ্কা, ‘আমাদের কী হবে? এরই মধ্যে আমরা হুমকির মধ্যে আছি। এখন কোনো পুলিশ বা সৈন্য নিরাপত্তা দিচ্ছে না। যখন দরজায় কেউ আওয়াজ করছে, মুর্তাজার ধারণা ওটা তালেবান এবং ছুটে আমার কাছে বা মায়ের কাছে লুকাতে যাচ্ছে।’

মাহদিয়া জানিয়েছেন, মেসির সঙ্গে দেখা হওয়াটাও তাঁদের জীবনে নেতিবাচক ঘটনা হয়ে উঠেছিল। কারণ, সবাই ধরেই নিয়েছিল, শুধু মেসির সঙ্গে দেখাই হয়নি তাঁদের, সঙ্গে বেশ অর্থও দেওয়া হয়েছিল। দোহা থেকে ফেরার পর থেকেই হুমকি পেতেন এবং মুর্তাজাকে অপহরণের ভয়ে থাকতেন তাঁরা।

0 Response to "তালেবানদের ভয়ে আফগানিস্তান ছাড়তে চাইছে ‘প্লাস্টিক মেসি’"

Ads on article

Advertise in articles 1

advertising articles 2

Advertise under the article